ঢাকা , রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিমানবন্দরে এক উত্তেজনাপূর্ণ রাত: তুহিন আলীর ঘটনার পেছনের সত্য

যাত্রী মো. তুহিন আলী বিমানবন্দরে হঠাৎ চিৎকার ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যস্ত সময়ের মাঝখানে ঘটে এক অস্বাভাবিক ঘটনা, যা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা যায়—এক যাত্রীর চিৎকার, গালিগালাজ আর উত্তেজনাপূর্ণ আচরণ। জনমনে সৃষ্টি হয় কৌতূহল, সমালোচনার ঝড়ও ওঠে।

বিষয়টি ঘিরে বিভ্রান্তি ছড়ানোয় অবশেষে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বেবিচক জানায়, গত ৩ জুন রাত ১টা ৩৬ মিনিটে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট MH-196–এর এক যাত্রী, মো. তুহিন আলী, বোর্ডিং ব্রিজ-৬–এ আচরণগত অস্থিরতা দেখাতে থাকেন। নিরাপত্তা টহলের সময় হঠাৎই তিনি চিৎকার, অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন।

যাত্রীদের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধিরা তার পাসপোর্ট ও মালামাল ফিরিয়ে দিতে গেলে তিনি সহযোগিতার পরিবর্তে সেগুলো ছুঁড়ে ফেলেন। এমনকি করেন অশালীন মন্তব্য—নিজের বাবা-মাকে নিয়েও।

এতটুকুতে থামেননি তুহিন আলী। আশপাশে উপস্থিত যাত্রী ও কর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তোলেন। এতে পাশের গেটের স্ক্যানিং কার্যক্রমও ব্যাহত হয়। তাকে শান্ত করতে নিরাপত্তা কর্মী ও এয়ারলাইন্স কর্মকর্তারা ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ব্যাগেজ এলাকায় নিতে চাইলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে অশোভন আচরণ চালিয়ে যান।

শেষ পর্যন্ত যোগাযোগ করা হয় তার ভাই ও চাচার সঙ্গে। তারাও জানান, এটি নতুন নয়—মো. তুহিন এর আগেও নেশাগ্রস্ত অবস্থায় এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। রাত গভীর ও বৃষ্টির কারণে তারা আসতেও পারেননি।

ঘটনার পর প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলা উত্তেজনার অবসান ঘটে ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে, যখন তিনি নিজ থেকেই বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।

বেবিচক একে “চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি” হিসেবে চিহ্নিত করে জানায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও এয়ারলাইন্স পেশাদারিত্ব ও ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করেছে। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে ঘটনা আংশিক ও বিকৃতভাবে প্রচারিত হওয়ায় জনমনে তৈরি হয় বিভ্রান্তি।

তাদের অনুরোধ—ভবিষ্যতে এমন সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনো কিছু প্রচার না করা হোক। কারণ, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ভাবমূর্তি রক্ষায় এটি অত্যন্ত জরুরি।

জনপ্রিয়

বিমানবন্দরে এক উত্তেজনাপূর্ণ রাত: তুহিন আলীর ঘটনার পেছনের সত্য

আপডেট সময়: ০২:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যস্ত সময়ের মাঝখানে ঘটে এক অস্বাভাবিক ঘটনা, যা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা যায়—এক যাত্রীর চিৎকার, গালিগালাজ আর উত্তেজনাপূর্ণ আচরণ। জনমনে সৃষ্টি হয় কৌতূহল, সমালোচনার ঝড়ও ওঠে।

বিষয়টি ঘিরে বিভ্রান্তি ছড়ানোয় অবশেষে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বেবিচক জানায়, গত ৩ জুন রাত ১টা ৩৬ মিনিটে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট MH-196–এর এক যাত্রী, মো. তুহিন আলী, বোর্ডিং ব্রিজ-৬–এ আচরণগত অস্থিরতা দেখাতে থাকেন। নিরাপত্তা টহলের সময় হঠাৎই তিনি চিৎকার, অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন।

যাত্রীদের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধিরা তার পাসপোর্ট ও মালামাল ফিরিয়ে দিতে গেলে তিনি সহযোগিতার পরিবর্তে সেগুলো ছুঁড়ে ফেলেন। এমনকি করেন অশালীন মন্তব্য—নিজের বাবা-মাকে নিয়েও।

এতটুকুতে থামেননি তুহিন আলী। আশপাশে উপস্থিত যাত্রী ও কর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তোলেন। এতে পাশের গেটের স্ক্যানিং কার্যক্রমও ব্যাহত হয়। তাকে শান্ত করতে নিরাপত্তা কর্মী ও এয়ারলাইন্স কর্মকর্তারা ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ব্যাগেজ এলাকায় নিতে চাইলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে অশোভন আচরণ চালিয়ে যান।

শেষ পর্যন্ত যোগাযোগ করা হয় তার ভাই ও চাচার সঙ্গে। তারাও জানান, এটি নতুন নয়—মো. তুহিন এর আগেও নেশাগ্রস্ত অবস্থায় এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। রাত গভীর ও বৃষ্টির কারণে তারা আসতেও পারেননি।

ঘটনার পর প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলা উত্তেজনার অবসান ঘটে ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে, যখন তিনি নিজ থেকেই বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।

বেবিচক একে “চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি” হিসেবে চিহ্নিত করে জানায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও এয়ারলাইন্স পেশাদারিত্ব ও ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করেছে। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে ঘটনা আংশিক ও বিকৃতভাবে প্রচারিত হওয়ায় জনমনে তৈরি হয় বিভ্রান্তি।

তাদের অনুরোধ—ভবিষ্যতে এমন সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনো কিছু প্রচার না করা হোক। কারণ, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ভাবমূর্তি রক্ষায় এটি অত্যন্ত জরুরি।