ঢাকা , রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘ভাগ হয়নি কো নজরুল’ , জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬ তম জন্মদিন আজ

চার বছরের শিশু বুলবুল যে রাতে মারা গিয়ে ছিল, সে রাতে তার পকেটে একটা কানাকড়িও ছিল না। অথচ কাফন,দাফন,গাড়িতে করে দেহ নেওয়া ও গোরস্থানে জমি কেনার জন্য দরকার ১৫০ টাকা, সে সময়ের ১৫০ টাকা মানে অনেক টাকা। এত টাকা কোথায় পাবে। বিভিন্ন লাইব্রেরীতে লোক পাঠানো হল। না, টাকার তেমন ব্যবস্থা হয়নি। শুধুমাত্র ডি. এম লাইব্রেরি দিয়েছিল ৩৫ টাকা। আরো অনেক টাকা বাকি। টাকা আবশ্যক। ঘরে দেহ রেখে কবি গেলেন এক প্রকাশকের কাছে। প্রকাশক শর্ত দিল। এই মুহূর্তে কবিতা লিখে দিতে হবে। তারপর টাকা।

কবি মনের নীরব কান্না,যতনা লিখে দিলেন কবিতায়…

“ঘুমিয়ে গেছে শান্ত হয়ে

আমার গানের বুলবুলি

করুন চোখে চেয়ে আছে

সাঁঝের ঝরা ফুলগুলি”

 

বাংলা সাহিত্যের আকাশে এক অনন্য দীপ্তিময় তারা কাজী নজরুল ইসলাম। শুধুই কবি নয়, তিনি ছিলেন এক বিদ্রোহী চিন্তাধারার প্রবর্তক, অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ, মানবিক মূল্যবোধের অনন্ত আলো। তাঁর সাহিত্যের পরতে পরতে বাঙালির আত্মপরিচয়, স্বপ্ন, সংগ্রাম ও মানবতা ছড়িয়ে আছে অফুরন্তভাবে।

নজরুল শুধু কবিতায় সীমাবদ্ধ থাকেননি, তিনি তাঁর কলমের আঁচড়ে ভেঙেছেন সাম্প্রদায়িকতার শিকল, উচ্চারণ করেছেন সমাজে বঞ্চিত মানুষের অধিকারের কথা। তাঁর লেখা ছিল না নিছক অলংকারময় রচনা, বরং তা ছিল আন্দোলনের আহ্বান, একটি জাতিকে জাগিয়ে তোলার নিঃশব্দ বিপ্লব।

বিদ্রোহের কবি, মানবতার ভাষ্যকার

নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা শুধুই একটি সাহিত্যকর্ম নয়, এটি যেন এক জাতির কণ্ঠস্বর। তিনি লিখেছেন—
“আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদচিহ্ন।”
এই উচ্চারণই তাঁকে আলাদা করেছে অন্য সব কবির থেকে। একাধারে হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান—সব ধর্ম, সব শ্রেণি, সব জাতির প্রতি তাঁর ছিল গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

তাঁর লেখনীতে আমরা পাই চণ্ডীদাসের মানবতাবাদ, পাই ব্রিটিশবিরোধী প্রেরণা, পাই ঈদের আনন্দে সংহতির বার্তা। তিনি লিখেছেন—
“গাহি সাম্যের গান/মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।”
এই এক লাইনে ফুটে উঠেছে নজরুলের মূল দর্শন—মানুষের জন্য লেখা, মানুষেরই পাশে দাঁড়ানো।

ধর্মীয় ঐক্য ও সংস্কৃতির সেতুবন্ধন

নজরুল ছিলেন মুসলমান, কিন্তু তাঁর কলমে বারবার উঠে এসেছে সব ধর্মের মহত্ব। তিনি লিখেছেন হিন্দু ভক্তিগীতি, আবার মুসলিম সমাজের রমজান ও ঈদ নিয়েও সৃষ্টি করেছেন কালজয়ী গান।
রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ”—শুধু একটি গান নয়, এটি হয়ে উঠেছে বাঙালি মুসলমান সমাজের আবেগ ও সংস্কৃতির প্রতীক।

ঈদের এই গান মানুষকে শেখায় কেবল উৎসব নয়, দরিদ্র ও অসহায়ের পাশে দাঁড়ানোই আসল ধর্মীয় চেতনা। নজরুলের কবিতা আমাদের শেখায়, উৎসব মানে একক আনন্দ নয়, বরং তা সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়ার এক অনন্য উপলক্ষ।

সাহসী লেখনী, জাগরণী চেতনা

নজরুলের কবিতা ও প্রবন্ধ বারবার শাসকের রোষানলে পড়েছে। ধূমকেতু পত্রিকার মাধ্যমে তিনি যে ধরণের প্রতিবাদমুখর ও সত্যকথনভিত্তিক সাংবাদিকতা শুরু করেছিলেন, তা ছিল একেবারেই ব্যতিক্রমী।
এই পত্রিকায় লেখা কবিতা আনন্দময়ীর আগমনে তাঁকে কারাগারে পাঠায়, কিন্তু তাঁর কলম থামেনি। রবীন্দ্রনাথ তখন এই তরুণ বিদ্রোহী কবিকে আশীর্বাদ করে লিখেছিলেন:

“আয় চলে আয়রে ধূমকেতু/আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু…”

এই ‘অগ্নিসেতু’ নির্মাণের কাজ নজরুল আজীবন করে গেছেন—সাহিত্যে, সংগীতে, মতাদর্শে।

অসাম্প্রদায়িকতা ও যুগান্তকারী চিন্তা

বাংলার ইতিহাসে নজরুলের চেয়ে স্পষ্ট ও বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর খুব কমই পাওয়া যায়, যিনি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এই মাত্রায় কথা বলেছেন। মানুষ কবিতায় তিনি লিখেছেন—

“সব ধর্ম, সব জাতি, সব বর্ণ—আমার ভাই।”

তিনি কখনো বিশ্বাস করেননি ধর্ম দিয়ে মানুষকে বিভক্ত করা যায়। তাঁর সাহসিকতা তখনকার প্রেক্ষাপটে ছিল বিপ্লবের সমান। তিনি দেখিয়েছেন, ধর্ম নয়, মনুষ্যত্বই প্রকৃত পরিচয়।

তারুণ্যের প্রেরণা ও নতুনের জয়গান

নজরুলের কবিতা শুধু অতীতচর্চা নয়, তা ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা।

“ঐ নতুনের কেতন ওড়ে কালবৈশাখির ঝড়/তোরা সব জয়ধ্বনি কর।”
এই পংক্তি তরুণদের ডাক দেয় পরিবর্তনের, গড়ার, ভাঙার, গর্জে ওঠার। নজরুল বুঝতেন—যুবসমাজই সমাজ পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি। তাঁর কবিতা তাই আজও জাগায়, নাড়া দেয়, প্রশ্ন তোলে।

নজরুলচর্চার বিস্তার: এখনো অপূর্ণ

যদিও বাংলাদেশে নজরুলচর্চা চলছে, কিন্তু তাঁর ব্যাপকতা ও প্রাসঙ্গিকতার তুলনায় তা যেন সমুদ্রের মাঝে বিন্দুসম। দুই বাংলায় তাঁকে নিয়ে প্রকৃত গবেষণা, চর্চা, অনুবাদ বা শিল্পরূপে প্রয়োগ এখনো প্রয়োজন অনেক বেশি।

নজরুলকে জানার অর্থ কেবল একজন কবিকে জানা নয়—এটি এক বিপ্লবী চিন্তাকে জানা, মানবতার জয়গানকে উপলব্ধি করা, বাঙালির আত্মপরিচয়ের সঙ্গে একাত্ম হওয়া।

কাজী নজরুল ইসলাম কেবল একজন কবি নন—তিনি বাঙালির চেতনার ধ্রুবতারা, বিদ্রোহের ঝঞ্ঝার মাঝে মানবতার মশালধারী। সময় যতই এগিয়ে যাচ্ছে, ততই স্পষ্ট হচ্ছে—তাঁর কণ্ঠ আজও প্রাসঙ্গিক, আরও দরকারি। কারণ অন্যায়ের বিরুদ্ধে যেই বিদ্রোহ, বৈষম্যের বিরুদ্ধে যেই কলম—সেই তো নজরুল। এবং সেই তো আজকেরও উত্তরাধিকার।

“ভুল হয়ে গেছে বিলকুল/আর সবকিছুই ভাগ হয়ে গেছে/ভাগ হয়নি কো নজরুল” — এই লাইন যেন আজকের প্রজন্মের দায়বোধ হয়ে রয়ে গেছে।

‘ভাগ হয়নি কো নজরুল’ , জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬ তম জন্মদিন আজ

আপডেট সময়: ০৩:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

চার বছরের শিশু বুলবুল যে রাতে মারা গিয়ে ছিল, সে রাতে তার পকেটে একটা কানাকড়িও ছিল না। অথচ কাফন,দাফন,গাড়িতে করে দেহ নেওয়া ও গোরস্থানে জমি কেনার জন্য দরকার ১৫০ টাকা, সে সময়ের ১৫০ টাকা মানে অনেক টাকা। এত টাকা কোথায় পাবে। বিভিন্ন লাইব্রেরীতে লোক পাঠানো হল। না, টাকার তেমন ব্যবস্থা হয়নি। শুধুমাত্র ডি. এম লাইব্রেরি দিয়েছিল ৩৫ টাকা। আরো অনেক টাকা বাকি। টাকা আবশ্যক। ঘরে দেহ রেখে কবি গেলেন এক প্রকাশকের কাছে। প্রকাশক শর্ত দিল। এই মুহূর্তে কবিতা লিখে দিতে হবে। তারপর টাকা।

কবি মনের নীরব কান্না,যতনা লিখে দিলেন কবিতায়…

“ঘুমিয়ে গেছে শান্ত হয়ে

আমার গানের বুলবুলি

করুন চোখে চেয়ে আছে

সাঁঝের ঝরা ফুলগুলি”

 

বাংলা সাহিত্যের আকাশে এক অনন্য দীপ্তিময় তারা কাজী নজরুল ইসলাম। শুধুই কবি নয়, তিনি ছিলেন এক বিদ্রোহী চিন্তাধারার প্রবর্তক, অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ, মানবিক মূল্যবোধের অনন্ত আলো। তাঁর সাহিত্যের পরতে পরতে বাঙালির আত্মপরিচয়, স্বপ্ন, সংগ্রাম ও মানবতা ছড়িয়ে আছে অফুরন্তভাবে।

নজরুল শুধু কবিতায় সীমাবদ্ধ থাকেননি, তিনি তাঁর কলমের আঁচড়ে ভেঙেছেন সাম্প্রদায়িকতার শিকল, উচ্চারণ করেছেন সমাজে বঞ্চিত মানুষের অধিকারের কথা। তাঁর লেখা ছিল না নিছক অলংকারময় রচনা, বরং তা ছিল আন্দোলনের আহ্বান, একটি জাতিকে জাগিয়ে তোলার নিঃশব্দ বিপ্লব।

বিদ্রোহের কবি, মানবতার ভাষ্যকার

নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা শুধুই একটি সাহিত্যকর্ম নয়, এটি যেন এক জাতির কণ্ঠস্বর। তিনি লিখেছেন—
“আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদচিহ্ন।”
এই উচ্চারণই তাঁকে আলাদা করেছে অন্য সব কবির থেকে। একাধারে হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান—সব ধর্ম, সব শ্রেণি, সব জাতির প্রতি তাঁর ছিল গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

তাঁর লেখনীতে আমরা পাই চণ্ডীদাসের মানবতাবাদ, পাই ব্রিটিশবিরোধী প্রেরণা, পাই ঈদের আনন্দে সংহতির বার্তা। তিনি লিখেছেন—
“গাহি সাম্যের গান/মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।”
এই এক লাইনে ফুটে উঠেছে নজরুলের মূল দর্শন—মানুষের জন্য লেখা, মানুষেরই পাশে দাঁড়ানো।

ধর্মীয় ঐক্য ও সংস্কৃতির সেতুবন্ধন

নজরুল ছিলেন মুসলমান, কিন্তু তাঁর কলমে বারবার উঠে এসেছে সব ধর্মের মহত্ব। তিনি লিখেছেন হিন্দু ভক্তিগীতি, আবার মুসলিম সমাজের রমজান ও ঈদ নিয়েও সৃষ্টি করেছেন কালজয়ী গান।
রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ”—শুধু একটি গান নয়, এটি হয়ে উঠেছে বাঙালি মুসলমান সমাজের আবেগ ও সংস্কৃতির প্রতীক।

ঈদের এই গান মানুষকে শেখায় কেবল উৎসব নয়, দরিদ্র ও অসহায়ের পাশে দাঁড়ানোই আসল ধর্মীয় চেতনা। নজরুলের কবিতা আমাদের শেখায়, উৎসব মানে একক আনন্দ নয়, বরং তা সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়ার এক অনন্য উপলক্ষ।

সাহসী লেখনী, জাগরণী চেতনা

নজরুলের কবিতা ও প্রবন্ধ বারবার শাসকের রোষানলে পড়েছে। ধূমকেতু পত্রিকার মাধ্যমে তিনি যে ধরণের প্রতিবাদমুখর ও সত্যকথনভিত্তিক সাংবাদিকতা শুরু করেছিলেন, তা ছিল একেবারেই ব্যতিক্রমী।
এই পত্রিকায় লেখা কবিতা আনন্দময়ীর আগমনে তাঁকে কারাগারে পাঠায়, কিন্তু তাঁর কলম থামেনি। রবীন্দ্রনাথ তখন এই তরুণ বিদ্রোহী কবিকে আশীর্বাদ করে লিখেছিলেন:

“আয় চলে আয়রে ধূমকেতু/আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু…”

এই ‘অগ্নিসেতু’ নির্মাণের কাজ নজরুল আজীবন করে গেছেন—সাহিত্যে, সংগীতে, মতাদর্শে।

অসাম্প্রদায়িকতা ও যুগান্তকারী চিন্তা

বাংলার ইতিহাসে নজরুলের চেয়ে স্পষ্ট ও বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর খুব কমই পাওয়া যায়, যিনি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এই মাত্রায় কথা বলেছেন। মানুষ কবিতায় তিনি লিখেছেন—

“সব ধর্ম, সব জাতি, সব বর্ণ—আমার ভাই।”

তিনি কখনো বিশ্বাস করেননি ধর্ম দিয়ে মানুষকে বিভক্ত করা যায়। তাঁর সাহসিকতা তখনকার প্রেক্ষাপটে ছিল বিপ্লবের সমান। তিনি দেখিয়েছেন, ধর্ম নয়, মনুষ্যত্বই প্রকৃত পরিচয়।

তারুণ্যের প্রেরণা ও নতুনের জয়গান

নজরুলের কবিতা শুধু অতীতচর্চা নয়, তা ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা।

“ঐ নতুনের কেতন ওড়ে কালবৈশাখির ঝড়/তোরা সব জয়ধ্বনি কর।”
এই পংক্তি তরুণদের ডাক দেয় পরিবর্তনের, গড়ার, ভাঙার, গর্জে ওঠার। নজরুল বুঝতেন—যুবসমাজই সমাজ পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি। তাঁর কবিতা তাই আজও জাগায়, নাড়া দেয়, প্রশ্ন তোলে।

নজরুলচর্চার বিস্তার: এখনো অপূর্ণ

যদিও বাংলাদেশে নজরুলচর্চা চলছে, কিন্তু তাঁর ব্যাপকতা ও প্রাসঙ্গিকতার তুলনায় তা যেন সমুদ্রের মাঝে বিন্দুসম। দুই বাংলায় তাঁকে নিয়ে প্রকৃত গবেষণা, চর্চা, অনুবাদ বা শিল্পরূপে প্রয়োগ এখনো প্রয়োজন অনেক বেশি।

নজরুলকে জানার অর্থ কেবল একজন কবিকে জানা নয়—এটি এক বিপ্লবী চিন্তাকে জানা, মানবতার জয়গানকে উপলব্ধি করা, বাঙালির আত্মপরিচয়ের সঙ্গে একাত্ম হওয়া।

কাজী নজরুল ইসলাম কেবল একজন কবি নন—তিনি বাঙালির চেতনার ধ্রুবতারা, বিদ্রোহের ঝঞ্ঝার মাঝে মানবতার মশালধারী। সময় যতই এগিয়ে যাচ্ছে, ততই স্পষ্ট হচ্ছে—তাঁর কণ্ঠ আজও প্রাসঙ্গিক, আরও দরকারি। কারণ অন্যায়ের বিরুদ্ধে যেই বিদ্রোহ, বৈষম্যের বিরুদ্ধে যেই কলম—সেই তো নজরুল। এবং সেই তো আজকেরও উত্তরাধিকার।

“ভুল হয়ে গেছে বিলকুল/আর সবকিছুই ভাগ হয়ে গেছে/ভাগ হয়নি কো নজরুল” — এই লাইন যেন আজকের প্রজন্মের দায়বোধ হয়ে রয়ে গেছে।