ঢাকা , রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইশরাককে শপথ পড়ানোর দাবিতে ডিএসসিসির কর্মবিরতি, ১০ দিন ধরে অচল নগর ভবন

 বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে টানা ১০ দিন ধরে চলমান কর্মবিরতিতে অচল হয়ে পড়েছে নগর ভবনের সব কার্যক্রম। আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ডিএসসিসির কর্মচারী ইউনিয়নসহ বিএনপির নেতাকর্মী ও ইশরাক সমর্থকরা।

আজ রবিবার সকাল ১০টার পর থেকে নগর ভবন চত্বরে জড়ো হয়ে আন্দোলনকারীরা আবারও দাবি জানান, দ্রুত ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়িয়ে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইশরাককে মেয়রের চেয়ারে না বসানো পর্যন্ত আন্দোলন চলবে এবং কেউ বাড়ি ফিরবে না।

ডিএসসিসির কর্মচারী মুনীর হোসেন বলেন, “আমরা চাই, ইশরাক হোসেনের শপথ অনুষ্ঠান করে তাকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হোক। ইশরাক হোসেন মেয়রের চেয়ারে বসলেই আমরা বাড়ি ফিরব।”

আন্দোলনকারীরা বলছেন, এই অচলাবস্থার জন্য তারা দায়ী নন। আবদুল কাইয়ুম নামে এক কর্মচারী বলেন, “আমাদের আন্দোলনের কারণে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে না। বরং যাঁরা আদালতের রায় বাস্তবায়ন করছেন না, তারাই দায়ী।”

কর্মসূচির কারণে নগরবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। নগর ভবনের মূল প্রবেশপথসহ অন্যান্য ফটকে তালা ঝুলছে, সামান্য পকেট গেট দিয়েও অনেকে প্রবেশ করতে পারছেন না। নগর ভবনের ভেতরে অবস্থিত অঞ্চল-১ ও অঞ্চল-৪-এর কার্যালয়সহ সকল কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে।

ওয়ারী থেকে আসা সেবাপ্রার্থী সালাহউদ্দিন বলেন, “মেয়ের জন্ম নিবন্ধনের একটু সংশোধন দরকার ছিল। কয়েকদিন ধরে আসছি, কিন্তু অফিসই খুলছে না। কাজটা করতে পারছি না।”

গত ১৪ মে থেকে নগর ভবনের সামনে ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ইশরাকের সমর্থক ও বিএনপি নেতাকর্মীরা। ২০২০ সালের নির্বাচনের ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল গত ২৭ মার্চ রায় দেয় এবং ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে। তবে হাইকোর্টে দায়েরকৃত রিট এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ‘আইনি জটিলতার’ কারণে এখনো শপথ অনুষ্ঠান হয়নি।

গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট রিট খারিজ করে দেওয়ার পর ইশরাক সমর্থকরা আন্দোলন আরও জোরদার করেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপদেষ্টা ও সচিবদের পদত্যাগের দাবিও উঠে এসেছে ইশরাকের পক্ষ থেকে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী জানান, “আদালতের রায়ের কপি পেয়েছি। রায় অনুসারে ২৬ মের মধ্যে শপথ গ্রহণের বিষয়ে বাধ্যবাধকতা আছে। করণীয় নির্ধারণে আমরা আলোচনা করছি। শিগগিরই সমাধান আসবে।”

তবে শেষ পর্যন্ত শপথ অনুষ্ঠান আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কিনা, কিংবা আন্দোলনকারীদের দাবির কী পরিণতি হবে, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। নগরবাসী তাকিয়ে আছে সরকার ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে।

ইশরাককে শপথ পড়ানোর দাবিতে ডিএসসিসির কর্মবিরতি, ১০ দিন ধরে অচল নগর ভবন

আপডেট সময়: ০৩:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

 বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে টানা ১০ দিন ধরে চলমান কর্মবিরতিতে অচল হয়ে পড়েছে নগর ভবনের সব কার্যক্রম। আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ডিএসসিসির কর্মচারী ইউনিয়নসহ বিএনপির নেতাকর্মী ও ইশরাক সমর্থকরা।

আজ রবিবার সকাল ১০টার পর থেকে নগর ভবন চত্বরে জড়ো হয়ে আন্দোলনকারীরা আবারও দাবি জানান, দ্রুত ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়িয়ে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইশরাককে মেয়রের চেয়ারে না বসানো পর্যন্ত আন্দোলন চলবে এবং কেউ বাড়ি ফিরবে না।

ডিএসসিসির কর্মচারী মুনীর হোসেন বলেন, “আমরা চাই, ইশরাক হোসেনের শপথ অনুষ্ঠান করে তাকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হোক। ইশরাক হোসেন মেয়রের চেয়ারে বসলেই আমরা বাড়ি ফিরব।”

আন্দোলনকারীরা বলছেন, এই অচলাবস্থার জন্য তারা দায়ী নন। আবদুল কাইয়ুম নামে এক কর্মচারী বলেন, “আমাদের আন্দোলনের কারণে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে না। বরং যাঁরা আদালতের রায় বাস্তবায়ন করছেন না, তারাই দায়ী।”

কর্মসূচির কারণে নগরবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। নগর ভবনের মূল প্রবেশপথসহ অন্যান্য ফটকে তালা ঝুলছে, সামান্য পকেট গেট দিয়েও অনেকে প্রবেশ করতে পারছেন না। নগর ভবনের ভেতরে অবস্থিত অঞ্চল-১ ও অঞ্চল-৪-এর কার্যালয়সহ সকল কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে।

ওয়ারী থেকে আসা সেবাপ্রার্থী সালাহউদ্দিন বলেন, “মেয়ের জন্ম নিবন্ধনের একটু সংশোধন দরকার ছিল। কয়েকদিন ধরে আসছি, কিন্তু অফিসই খুলছে না। কাজটা করতে পারছি না।”

গত ১৪ মে থেকে নগর ভবনের সামনে ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ইশরাকের সমর্থক ও বিএনপি নেতাকর্মীরা। ২০২০ সালের নির্বাচনের ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল গত ২৭ মার্চ রায় দেয় এবং ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে। তবে হাইকোর্টে দায়েরকৃত রিট এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ‘আইনি জটিলতার’ কারণে এখনো শপথ অনুষ্ঠান হয়নি।

গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট রিট খারিজ করে দেওয়ার পর ইশরাক সমর্থকরা আন্দোলন আরও জোরদার করেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপদেষ্টা ও সচিবদের পদত্যাগের দাবিও উঠে এসেছে ইশরাকের পক্ষ থেকে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী জানান, “আদালতের রায়ের কপি পেয়েছি। রায় অনুসারে ২৬ মের মধ্যে শপথ গ্রহণের বিষয়ে বাধ্যবাধকতা আছে। করণীয় নির্ধারণে আমরা আলোচনা করছি। শিগগিরই সমাধান আসবে।”

তবে শেষ পর্যন্ত শপথ অনুষ্ঠান আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কিনা, কিংবা আন্দোলনকারীদের দাবির কী পরিণতি হবে, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। নগরবাসী তাকিয়ে আছে সরকার ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে।