ইরানে নারীদের জন্য নতুন বাধ্যতামূলক পোশাকবিধি আইন কার্যকর হতে যাচ্ছে, যা ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। এই আইন অনুযায়ী, নারীদের শালীন পোশাক পরা বাধ্যতামূলক হবে এবং এর অমান্য করলে মৃত্যুদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। এর পাশাপাশি, ‘শালীনতা ও হিজাবের সংস্কৃতি’ নামে পাস হওয়া আইনে ১২ হাজার ৫০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা, বেত্রাঘাত এবং দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ডের শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে।
আইনটির ৩৭ ধারা অনুসারে, যারা বিদেশি মিডিয়া বা আন্তর্জাতিক সুশীল সমাজের কাছে অশালীনতা উন্মোচন বা ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ পোশাক’ প্রচারে সহায়তা করবে, তাদের ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১২ হাজার ৫০০ ইউরো জরিমানা হতে পারে। এই আইনটি নারীদের স্বাধীনতার ওপর ব্যাপক দমনমূলক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এবং অনেক মানবাধিকার সংস্থা, যেমন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, জানিয়েছে যে এটি নারীদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদেও মৃত্যুদণ্ডের ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান নিজেও বলেছেন, এই আইন বাস্তবায়নের ফলে ইরানি সমাজে আরও অসন্তোষের সৃষ্টি হবে। তিনি আশঙ্কা করছেন যে, এটি আরও বেশি বিরোধিতা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করবে। আইনটি ২০২২ সালে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে প্রণীত হয়েছে, যা ইরানে নারীদের অধিকারের জন্য একটি বড় আন্দোলন ছিল।
এই নতুন আইন নারী ও কিশোরীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে, এবং এতে ইরানি সমাজে অনেকেরই উদ্বেগ বাড়ছে। মানবাধিকার কর্মীরা এবং দেশটির অন্যান্য নেতা এই আইনকে নারীদের প্রতি অবিচার এবং তাদের স্বাধীনতার প্রতি বড় আঘাত হিসেবে দেখছেন।