সন্তান জন্মের পর দাম্পত্য জীবনে দূরত্ব বাড়ে, এমন একটি পরিস্থিতি অনেক দম্পতিরই অভিজ্ঞতা। এ পরিবর্তনের পেছনে কিছু সাধারণ কারণ রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো, সন্তানের দিকে অধিক মনোযোগ দেওয়া এবং দাম্পত্য জীবনের বিষয়গুলো একরকম উপেক্ষিত হয়ে পড়া। তবে, যদি বুদ্ধি করে এই পরিস্থিতি সামলানো যায়, তবে সম্পর্কটি আরও গভীর ও মধুর হতে পারে। এখানে কিছু কার্যকর উপায় দেয়া হলো, যেগুলি সাহায্য করতে পারে সন্তান জন্মের পর দাম্পত্য জীবনে দূরত্ব কমাতে:
১. রোম্যান্স বজায় রাখা:
সন্তান জন্মের পর স্বামী-স্ত্রী দুজনই বাবা-মা হিসেবে নতুন ভূমিকা গ্রহণ করেন, যার ফলে তাদের রোমান্টিক সম্পর্কের জায়গা অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে, সম্পর্কের মাধুর্য বজায় রাখতে সঙ্গীর প্রতি আগ্রহ এবং ভালোবাসা প্রকাশ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ছোটখাটো সারপ্রাইজ, সঙ্গীর প্রশংসা, বা একসঙ্গে বাইরে যাওয়ার মতো ছোট ছোট উদ্যোগ সম্পর্ককে প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করে।
২. একান্তে সময় কাটানো:
সন্তান জন্মের পর অনেক সময় বাবা-মা একে অপরকে পর্যাপ্ত সময় দিতে পারেন না। কিন্তু সম্পর্কের শক্তি ধরে রাখতে, একে অপরের জন্য কিছু সময় বরাদ্দ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সন্তানকে ঘিরে নতুন পৃথিবী গড়ে ওঠে, কিন্তু তাতে নিজের সম্পর্কের জন্যও সময় বের করা প্রয়োজন। দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় শুধু সঙ্গীকে দিতে চেষ্টা করুন, যেন সম্পর্কটা আরও গভীর হয়।
৩. সঙ্গীর প্রশংসা করা:
সন্তান জন্মের পর অনেক নারী শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের কারণে অবসাদে ভোগেন। এই সময় তাদের কাজের প্রশংসা করলে মন ভালো থাকে। কখনও কখনও সঙ্গীকে তার পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ জানানো ও প্রশংসা করা, তার আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং সম্পর্কের গভীরতা বাড়ায়।
৪. একসঙ্গে কাজ করা:
দাম্পত্য সম্পর্কের গাঢ়তা বাড়াতে, সন্তানের টুকিটুকি কাজের পাশাপাশি বাড়ির অন্যান্য কাজও একসঙ্গে করা যেতে পারে। একে অপরের পাশে থাকলে সম্পর্কের জটিলতা অনেকটাই কমে যায়। একসঙ্গে জিমে যাওয়ার, সুইমিং করতে যাওয়ার, বা খাওয়ার পর হাঁটতে যাওয়ার মতো ছোট ছোট বিষয়ও সম্পর্ককে মজবুত করে।
৫. পুরনো বিবাদ ভুলে যাওয়া:
সন্তান জন্মের পর সবার মনোযোগ অনেক সময় সন্তানের দিকে চলে যায়, ফলে পুরনো কোনো বিবাদ বা ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে ঝগড়া এড়িয়ে চলা উচিত। সম্পর্কের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি এড়িয়ে, একে অপরের ছোটখাটো ভুল ক্ষমা করে দিলে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে।
সন্তান জন্মের পর দাম্পত্য জীবনে কিছুটা দূরত্ব বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক, তবে যদি একে অপরকে গুরুত্ব দিয়ে, ভালোবাসা ও সহানুভূতির মাধ্যমে এই দূরত্ব কমানো যায়, তাহলে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী এবং সুখী হবে।