ঢাকা , রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া

দেশবরেণ্য চিত্রনায়িকা ও চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমান আর বেঁচে নেই। ৪ জানুয়ারি শুক্রবার দিবাগত রাতে ঢাকার বিএসএমএমইউ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

 

চাঁদপুরের কৃতি সন্তান অঞ্জনা রহমান ১৯৬৫ সালের ২৭ জুন জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক নিবাস ছিল শহরের পুরানবাজার হরিসভা এলাকায়। তার বাবা প্রফুল্ল চন্দ্র সাহা ব্যাংকের চাকরির সুবাদে ঢাকার ব্যাংক কোয়াটারে বসবাস করতেন, আর মা ছিলেন কমলা সাহা। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তিনি প্রখ্যাত পরিচালক ও প্রযোজক আজিজুর রহমানকে বিয়ে করেন।

 

অঞ্জনার মৃত্যুর খবর তার ছেলে নিশাত মণি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ডিসেম্বরের প্রথম দিকে জ্বর ও রক্তে ইনফেকশনের কারণে অঞ্জনা রহমান ইউনাইটেড হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি হন। পরবর্তীতে তার অবস্থার অবনতি হলে ১ জানুয়ারি তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।

 

অঞ্জনা রহমান ১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরী পরিচালিত সেতু চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেছিলেন। তবে তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল দস্যু বনহুর, যা শামসুদ্দিন টগর পরিচালনা করেছিলেন। তার বিপরীতে ছিলেন নায়ক সোহেল রানা। এরপর তিনি প্রায় ৩ শতাধিক সিনেমায় নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেন। বাংলাদেশসহ ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, নেপাল, থাইল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত সিনেমাগুলোতে তিনি অভিনয় করেছেন এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছেন।

 

চলচ্চিত্রের পাশাপাশি অঞ্জনা রহমান ছিলেন একজন আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কৃত নৃত্যশিল্পী। ১৯৭৯ সালে এশিয়া মহাদেশের নৃত্য প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন তিনি এবং তার নাচের গুণে দেশ সেরা অভিনেত্রীর তকমা পান।

 

জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে অঞ্জনা রহমান রাজনীতিতে সক্রিয় হন। তিনি বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং আওয়ামী সংস্কৃতি লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর সদর-হাইমচর-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগে নৌকা প্রতীকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।

 

অঞ্জনা রহমানের অকাল প্রয়াণে পুরো চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক জগৎ শোকাবহ। তার অসামান্য প্রতিভা, অবদান এবং নৃত্যশিল্পের মাধ্যমে তিনি আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া

আপডেট সময়: ০১:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫

দেশবরেণ্য চিত্রনায়িকা ও চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমান আর বেঁচে নেই। ৪ জানুয়ারি শুক্রবার দিবাগত রাতে ঢাকার বিএসএমএমইউ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

 

চাঁদপুরের কৃতি সন্তান অঞ্জনা রহমান ১৯৬৫ সালের ২৭ জুন জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক নিবাস ছিল শহরের পুরানবাজার হরিসভা এলাকায়। তার বাবা প্রফুল্ল চন্দ্র সাহা ব্যাংকের চাকরির সুবাদে ঢাকার ব্যাংক কোয়াটারে বসবাস করতেন, আর মা ছিলেন কমলা সাহা। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তিনি প্রখ্যাত পরিচালক ও প্রযোজক আজিজুর রহমানকে বিয়ে করেন।

 

অঞ্জনার মৃত্যুর খবর তার ছেলে নিশাত মণি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ডিসেম্বরের প্রথম দিকে জ্বর ও রক্তে ইনফেকশনের কারণে অঞ্জনা রহমান ইউনাইটেড হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি হন। পরবর্তীতে তার অবস্থার অবনতি হলে ১ জানুয়ারি তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।

 

অঞ্জনা রহমান ১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরী পরিচালিত সেতু চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেছিলেন। তবে তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল দস্যু বনহুর, যা শামসুদ্দিন টগর পরিচালনা করেছিলেন। তার বিপরীতে ছিলেন নায়ক সোহেল রানা। এরপর তিনি প্রায় ৩ শতাধিক সিনেমায় নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেন। বাংলাদেশসহ ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, নেপাল, থাইল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত সিনেমাগুলোতে তিনি অভিনয় করেছেন এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছেন।

 

চলচ্চিত্রের পাশাপাশি অঞ্জনা রহমান ছিলেন একজন আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কৃত নৃত্যশিল্পী। ১৯৭৯ সালে এশিয়া মহাদেশের নৃত্য প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন তিনি এবং তার নাচের গুণে দেশ সেরা অভিনেত্রীর তকমা পান।

 

জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে অঞ্জনা রহমান রাজনীতিতে সক্রিয় হন। তিনি বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং আওয়ামী সংস্কৃতি লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর সদর-হাইমচর-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগে নৌকা প্রতীকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।

 

অঞ্জনা রহমানের অকাল প্রয়াণে পুরো চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক জগৎ শোকাবহ। তার অসামান্য প্রতিভা, অবদান এবং নৃত্যশিল্পের মাধ্যমে তিনি আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।