ঢাকা , রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২০১৪ সালের এই দিনে একতরফা নির্বাচনের যাত্রা করে আওয়ামী লীগ

 

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি, গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাড়ির চারপাশে বালুবোঝাই ট্রাক এবং পুলিশে তৈরি করা মানব দেয়ালের মাধ্যমে পুরো বিশ্ব তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে লক্ষ্য করে। তখন গৃহবন্দি করা হয়েছিল বিএনপির চেয়ারপারসন এবং বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, বেগম খালেদা জিয়াকে।

 

এই সময়েই দেশে অনুষ্ঠিত হতে থাকে একটি বিতর্কিত এবং একতরফা জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যেখানে আওয়ামি লীগ, নির্দিষ্ট বিরোধী পক্ষের উপস্থিতি ছাড়াই ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়। বাকি ১৪৭টি আসনে শুধুমাত্র নিয়মরক্ষার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়, যার ফলে ভোটারশূন্য কেন্দ্রে হয়ে ওঠে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

 

এ নির্বাচনের পেছনে মূল কারণ ছিল ২০১১ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত হওয়া এবং সেই অনুযায়ী ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করা, যা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বৈধতা দেয়। এ সময়ে দেশে বিরোধী দলগুলো, বিশেষ করে বিএনপি, ভোট বর্জন করেছিল।

 

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার একক সিদ্ধান্তে নির্বাচন আয়োজন করলে তাতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা ব্যর্থ হলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটে। নির্বাচনী কমিশন এবং পুলিশের ভূমিকা ছিল তৎকালীন সরকারের পক্ষেই।

 

এ নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে ৫ শতাংশ ভোট পড়লেও ৪০ শতাংশ ভোটগ্রহণ দেখানো হয়, যার মূল কারিগর হিসেবে দায়ী করা হয় নির্বাচন কমিশনের তৎকালীন প্রধান কাজী রকিবুদ্দিন আহমদকে।

 

এ নির্বাচনের পর থেকেই দেশে ভোটাধিকার হারানোর জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হতে থাকে, যা পরবর্তীতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণ হয়ে ওঠে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই পরিস্থিতির ফলস্বরূপ শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের জন্য ভবিষ্যতে নেতিবাচক পরিণতি নিয়ে আসে, যার প্রেক্ষিতে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান ঘটলে, দেশের শাসকরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

২০১৪ সালের এই দিনে একতরফা নির্বাচনের যাত্রা করে আওয়ামী লীগ

আপডেট সময়: ০৩:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫

 

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি, গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাড়ির চারপাশে বালুবোঝাই ট্রাক এবং পুলিশে তৈরি করা মানব দেয়ালের মাধ্যমে পুরো বিশ্ব তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে লক্ষ্য করে। তখন গৃহবন্দি করা হয়েছিল বিএনপির চেয়ারপারসন এবং বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, বেগম খালেদা জিয়াকে।

 

এই সময়েই দেশে অনুষ্ঠিত হতে থাকে একটি বিতর্কিত এবং একতরফা জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যেখানে আওয়ামি লীগ, নির্দিষ্ট বিরোধী পক্ষের উপস্থিতি ছাড়াই ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়। বাকি ১৪৭টি আসনে শুধুমাত্র নিয়মরক্ষার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়, যার ফলে ভোটারশূন্য কেন্দ্রে হয়ে ওঠে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

 

এ নির্বাচনের পেছনে মূল কারণ ছিল ২০১১ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত হওয়া এবং সেই অনুযায়ী ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করা, যা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বৈধতা দেয়। এ সময়ে দেশে বিরোধী দলগুলো, বিশেষ করে বিএনপি, ভোট বর্জন করেছিল।

 

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার একক সিদ্ধান্তে নির্বাচন আয়োজন করলে তাতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা ব্যর্থ হলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটে। নির্বাচনী কমিশন এবং পুলিশের ভূমিকা ছিল তৎকালীন সরকারের পক্ষেই।

 

এ নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে ৫ শতাংশ ভোট পড়লেও ৪০ শতাংশ ভোটগ্রহণ দেখানো হয়, যার মূল কারিগর হিসেবে দায়ী করা হয় নির্বাচন কমিশনের তৎকালীন প্রধান কাজী রকিবুদ্দিন আহমদকে।

 

এ নির্বাচনের পর থেকেই দেশে ভোটাধিকার হারানোর জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হতে থাকে, যা পরবর্তীতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণ হয়ে ওঠে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই পরিস্থিতির ফলস্বরূপ শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের জন্য ভবিষ্যতে নেতিবাচক পরিণতি নিয়ে আসে, যার প্রেক্ষিতে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান ঘটলে, দেশের শাসকরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।