রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে পূর্বাচলে প্লট গ্রহণের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, তার ছেলে রেদোয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও ছোট মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকির বিরুদ্ধে আলাদা আলাদা তিনটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এই মামলা দায়ের করা হয়। মামলাগুলো সম্পর্কে দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগের ভিত্তিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রতিটি মামলার আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও অনৈতিক সুবিধা দেয়ার অভিযোগে আসামি হয়েছেন। এর আগে, রোববার (১২ জানুয়ারি) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়।
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর পূর্বাচলে ১০ কাঠা করে শেখ পরিবারের ৬ জনকে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দের অভিযোগের অনুসন্ধানে নামে দুদক। অনুসন্ধান শেষে তারা অভিযোগে সত্যতা পায়।
এজাহারে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হলেও পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তায় প্লট নং ১৭ সায়মা ওয়াজেদের নামে বরাদ্দ নিয়েছেন এবং রেজিস্ট্রি মূলে প্লট গ্রহণ করেছেন।
এই মামলায় দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৬১/১৬৩/১৬৪/৪০৯/১০৯ ধারা, এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় এবং সরকারের বিশেষ ক্ষমতার বলে শেখ হাসিনা তার পরিবারের সদস্যদের নামেও প্লট বরাদ্দের জন্য রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন।
শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে এই অভিযোগটি দুদক অনুসন্ধানের পর মামলা দায়ের করেছে। ২৭ ডিসেম্বর, দুদক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল যে, পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ের এই মামলা এবং অভিযোগ রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলের পর তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাটি।