ঢাকা , রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাউজানে সহসমন্বয়ক রাফির ওপর হামলা, ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের রাউজানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি ও তাঁর সহযোগীদের ওপর হামলার অভিযোগে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আবদুল্লাহ আল হামিম (২৩) নামের ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে গতকাল সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

 

এর আগে গতকাল বিকেলে রাউজানের উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে এক মতবিনিময় সভায় খান তালাত মাহমুদ রাফি ও তাঁর সহযোগীদের ওপর হামলা হয়। এ সময় হট্টগোলে কিছুক্ষণের জন্য সভা বন্ধ থাকে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা সভাস্থল থেকে আবদুল্লাহ আল হামিমকে আটক করে রাতে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে এ ঘটনায় আজ ভোর চারটায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি মুহাম্মদ বেলাল ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় ছাত্রলীগ কর্মী হামিমকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। হামিম রাউজানের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফজলে করিমের ছেলে ফারাজ করিমের সংগঠন ‘সেন্ট্রাল বয়েজ অব রাউজানের’ কর্মী ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

 

সভায় অংশ নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার উপজেলা পরিষদ সম্মেলনকক্ষে রাউজান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত ওই মতবিনিময় সভায় যোগ দেন খান তালাত মাহমুদ রাফি, রাসেল আহমদসহ সংগঠনের কয়েকজন নারী কর্মী। বিকেল ৫টার দিকে সভা চলাকালে ছাত্রলীগ কর্মী আবদুল্লাহ হামিমসহ ১০-১৫ জন ভেতরে ঢুকতে চায়। এ সময় অন্য ছাত্ররা তাতে বাধা দিলে হট্টগোল তৈরি হয়। বাধা পেয়ে আসামিরা রাফি ও কয়েকজন নারী কর্মীর ওপর হামলা করেন। গতকাল রাত ১০টার দিকে সভায় হট্টগোলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে আজ ভোরে এ ঘটনায় মামলা হয়।

 

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা জোর করে সভায় ঢুকতে চাইলে ছাত্ররা বাধা দেয়। পরে তাঁরা হামলা চালিয়ে রাফিসহ নারী কর্মী এবং অন্য কয়েকজনকে আহত করেন।

 

সভায় উপস্থিত থাকা সংগঠনের প্রতিনিধি জাহিদুল করিম হামলার ঘটনার কথা অস্বীকার করেন প্রথম আলোর কাছে। তবে কয়েকজন কর্মী বলেছেন হামলা হয়েছে। এ ছাড়া মামলার এজাহারেও হামলার কথা উল্লেখ রয়েছে। প্রথম আলোকে জাহিদুল করিম বলেন, কিছু শিক্ষার্থী অনধিকার চর্চা করে সভায় ঢুলতে চাইলে হট্টগোল বাঁধে। তবে মারামারি হয়নি। ১৫ থেকে ২০ মিনিট সভা বন্ধ ছিল। পরে আবার শুরু হয়।

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাউজানের প্রতিনিধি এম আবেদীন সাজিদ সভায় হামলা হয়েছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ আল হামিম নামে একজন পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছেন। হামলাকারীরা ছাত্রলীগ কর্মী এবং ফারাজ করিমের সংগঠন সেন্ট্রাল বয়েজ অফ রাউজানের সদস্য। তবে হামলার অভিযোগের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

 

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী আজ মঙ্গলবার দুপুরে গণমাধ্যমকে বলেন, কিছু ছাত্রলীগ কর্মী ছাত্রদের সভায় শিক্ষার্থী সেজে ঢুকে পড়তে চেয়েছিল। পরে ঢুলতে না পেরে তাঁরা হামলা চালায়। এ ঘটনায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। মোট ২০ জন আসামি আছে। আবদুল্লাহ আল হামিম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

রাউজানে সহসমন্বয়ক রাফির ওপর হামলা, ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেপ্তার

আপডেট সময়: ০৫:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫

চট্টগ্রামের রাউজানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি ও তাঁর সহযোগীদের ওপর হামলার অভিযোগে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আবদুল্লাহ আল হামিম (২৩) নামের ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে গতকাল সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

 

এর আগে গতকাল বিকেলে রাউজানের উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে এক মতবিনিময় সভায় খান তালাত মাহমুদ রাফি ও তাঁর সহযোগীদের ওপর হামলা হয়। এ সময় হট্টগোলে কিছুক্ষণের জন্য সভা বন্ধ থাকে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা সভাস্থল থেকে আবদুল্লাহ আল হামিমকে আটক করে রাতে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে এ ঘটনায় আজ ভোর চারটায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি মুহাম্মদ বেলাল ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় ছাত্রলীগ কর্মী হামিমকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। হামিম রাউজানের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফজলে করিমের ছেলে ফারাজ করিমের সংগঠন ‘সেন্ট্রাল বয়েজ অব রাউজানের’ কর্মী ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

 

সভায় অংশ নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার উপজেলা পরিষদ সম্মেলনকক্ষে রাউজান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত ওই মতবিনিময় সভায় যোগ দেন খান তালাত মাহমুদ রাফি, রাসেল আহমদসহ সংগঠনের কয়েকজন নারী কর্মী। বিকেল ৫টার দিকে সভা চলাকালে ছাত্রলীগ কর্মী আবদুল্লাহ হামিমসহ ১০-১৫ জন ভেতরে ঢুকতে চায়। এ সময় অন্য ছাত্ররা তাতে বাধা দিলে হট্টগোল তৈরি হয়। বাধা পেয়ে আসামিরা রাফি ও কয়েকজন নারী কর্মীর ওপর হামলা করেন। গতকাল রাত ১০টার দিকে সভায় হট্টগোলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে আজ ভোরে এ ঘটনায় মামলা হয়।

 

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা জোর করে সভায় ঢুকতে চাইলে ছাত্ররা বাধা দেয়। পরে তাঁরা হামলা চালিয়ে রাফিসহ নারী কর্মী এবং অন্য কয়েকজনকে আহত করেন।

 

সভায় উপস্থিত থাকা সংগঠনের প্রতিনিধি জাহিদুল করিম হামলার ঘটনার কথা অস্বীকার করেন প্রথম আলোর কাছে। তবে কয়েকজন কর্মী বলেছেন হামলা হয়েছে। এ ছাড়া মামলার এজাহারেও হামলার কথা উল্লেখ রয়েছে। প্রথম আলোকে জাহিদুল করিম বলেন, কিছু শিক্ষার্থী অনধিকার চর্চা করে সভায় ঢুলতে চাইলে হট্টগোল বাঁধে। তবে মারামারি হয়নি। ১৫ থেকে ২০ মিনিট সভা বন্ধ ছিল। পরে আবার শুরু হয়।

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাউজানের প্রতিনিধি এম আবেদীন সাজিদ সভায় হামলা হয়েছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ আল হামিম নামে একজন পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছেন। হামলাকারীরা ছাত্রলীগ কর্মী এবং ফারাজ করিমের সংগঠন সেন্ট্রাল বয়েজ অফ রাউজানের সদস্য। তবে হামলার অভিযোগের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

 

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী আজ মঙ্গলবার দুপুরে গণমাধ্যমকে বলেন, কিছু ছাত্রলীগ কর্মী ছাত্রদের সভায় শিক্ষার্থী সেজে ঢুকে পড়তে চেয়েছিল। পরে ঢুলতে না পেরে তাঁরা হামলা চালায়। এ ঘটনায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। মোট ২০ জন আসামি আছে। আবদুল্লাহ আল হামিম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।