ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি সম্প্রতি গুরুতর দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। ২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকালে রমনা পার্কে হাঁটার পর বাড়ি ফেরার পথে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা তাকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি চোখ, কপালসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পান। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকার পর তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসকরা তার চোখের ঠিক ওপরে ১০টি সেলাই করেন।
অভিনেত্রী নিজেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার আহত হওয়ার খবর জানিয়েছেন। ৩১ জানুয়ারি বিকেলে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, “বেশি না, মাত্র ১০টি সেলাই পড়েছে। এ আর এমন কী বলেন? চোখটা অন্ধ হয়নি, ব্রেইন হ্যামারেজও হয়নি, সেটাই তো অনেক বেশি পাওয়া। এ তেমন কিছু না, চোখের উপরের সেনসিটিভ জায়গায় মাত্র ১০টি সেলাই লেগেছে!”
তিনি তার স্ট্যাটাসে আরও লেখেন, “আমি যে প্রাণে বেঁচে আছি, এ জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।” তবে এ দুর্ঘটনা নিয়ে তিনি জনসাধারণকে সতর্ক করে দেন, বিশেষ করে মায়েরা এবং বাবারা, যারা ছোট বাচ্চাদের নিয়ে রাস্তায় চলাচল করেন। তিনি বলেন, “ব্যাটারিচালিত যানবাহন এবং তাদের চালক থেকে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। আমি ভেঙে চুরে বেঁচে গেছি, কিন্তু কোনো বাচ্চা যদি এমন আঘাত পায়!”
এছাড়া, তিনি তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে লিখেছেন, “আমি গলির ভেতরের রাস্তায় প্রাতঃভ্রমণ শেষে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পথের কিনার দিয়ে হেঁটে ফিরছিলাম। কিন্তু ধাক্কা দিয়ে আমাকে ফেলে দিয়ে বীরদর্পে চলে গেছে। তারা জানে না, কারো জীবন তাদের কাছে কতটা মূল্যবান।”
এদিকে, দুর্ঘটনার পর চারদিন পেরিয়ে গেলেও, তার মাথার এক পাশে কোনো বোধশক্তি নেই বলে উল্লেখ করেন শাহনাজ খুশি। তিনি লিখেছেন, “জানি না স্বাভাবিক চেহারায় ফিরব কি না, তবে সেই ট্রমা আমি কখনো ভুলব না, যখন রক্তাক্ত অবস্থায় পথের ওপর পড়ে ছিলাম।”
অভিনেত্রী আরও বলেন, “এখনকার সময়ের সড়ক দুর্ঘটনা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে অনেক প্রশ্ন মনে আসে। রাতে রাস্তাঘাটে পুলিশ বা ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদেরই। আমরা কীভাবে আমাদের সন্তানদের নিরাপদ রাখতে পারব?”
শেষে, তিনি সকলের জীবনের নিরাপত্তা কামনা করে লেখেন, “সবার জীবন যেন সংকটমুক্ত এবং মঙ্গলময় হয়।”
এ দুর্ঘটনা এবং তার পরবর্তী প্রতিক্রিয়া আমাদের সড়ক নিরাপত্তা ও সচেতনতা নিয়ে আরও গভীরভাবে ভাবতে বাধ্য করে।