সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মহাখালীতে রেলপথ অবরোধ করেছেন। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে এই অবরোধের কারণে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালীগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে যায়। শিক্ষার্থীরা লাল পতাকা উঁচিয়ে ট্রেনটি থামিয়ে দেন, এতে ঢাকার রেল চলাচলে সাময়িক বিঘ্ন ঘটে।
ট্রেনটির লোকোমাস্টার লতিফ জানান, “উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৩টা ২৫ মিনিটে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে আসে। ট্রেনের গতি ছিল ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার। হঠাৎ রেলগেটে লাল পতাকা ও মানুষের ভিড় দেখতে পাই। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে ট্রেনের গতি কমিয়ে থামাই এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “হঠাৎ ট্রেন থামাতে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে, তবে সৌভাগ্যবশত কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।”
এর আগে, তিতুমীর কলেজের মূল ফটকের সামনে থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে মহাখালী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নেন। তারা ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য, চলবে না চলবে না’, ‘প্রশাসনের সিন্ডিকেট, মানি না মানব না’সহ নানা স্লোগান দেন এবং প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
এ বিষয়ে গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার তারেক মাহমুদ বলেন, “শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা সতর্ক রয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো কতটুকু যৌক্তিক, তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বিবেচনা করবে। তবে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ কাজ করছে।”
প্রসঙ্গত, সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। মিছিল, সড়ক-রেলপথ অবরোধ, স্মারকলিপি প্রদান ও ক্লাস বর্জনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে তারা দাবি জানিয়ে আসছেন। এর প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি বিশেষ কমিটি গঠন করলেও এখনো কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। দাবির বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় ২৯ জানুয়ারি বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনসহ আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে আন্দোলন আরও বেগবান হবে।