ঢাকা , রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনে আল্টিমেটাম, না করলে শাটডাউন

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আজ (১০ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে সংবাদ সম্মেলন করে আগামী সাত দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় না পরিবর্তন হলে ক্যাম্পাসে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করার আল্টিমেটাম দিয়েছে।

 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন—বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক শামসুর রহমান, রহমত আলী, আরমান হোসেন, সাকিব মিয়া, আহসান হাবিব রকি, মেহেদী হাসানসহ অন্যান্য ছাত্র নেতৃবৃন্দ।

 

সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন বলেন, “২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু হয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা দাবি করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রাখার ঘোষণা দেন। অথচ রোকেয়া নামে রংপুরে আরেকটি সরকারি কলেজ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা বিভ্রান্তির সম্মুখীন হচ্ছেন।”

 

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী সরকারের শাসনামলে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পুনর্বহালের দাবি উঠেছিল, তখন তা নানান ট্যাগ দিয়ে দমন করার চেষ্টা করা হয়। ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে যখন রংপুরে একটি ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত হয়, তখনও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানায় এবং সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে সরকার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।”

 

সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে নাম পুনর্বহালের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, উপাচার্য ও শিক্ষা উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং সাধারণ রংপুরবাসীও এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

 

৫ ফেব্রুয়ারি, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ হাসিনার উদ্বোধনী ফলকটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে নতুন নাম ঘোষণা করেছেন। তবে, এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা সরকার এ বিষয়ে কার্যকর কোনও উদ্যোগ নেয়নি, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

 

তারা ঘোষণা করেন, “আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পুনর্বহাল না হলে ক্যাম্পাসে পুরোপুরি শাটডাউন কর্মসূচি পালন করা হবে। এর পুরো দায় দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উপর বর্তাবে।”

 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম শওকত আলী বলেন, “শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং রংপুরবাসীর দাবি প্রতিষ্ঠাকালীন রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পুনর্বহাল করা হোক। আমি এ বিষয়টি শিক্ষা উপদেষ্টা এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলকে জানিয়ে দিয়েছি। আশা করি, সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।”

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনে আল্টিমেটাম, না করলে শাটডাউন

আপডেট সময়: ০৭:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আজ (১০ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে সংবাদ সম্মেলন করে আগামী সাত দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় না পরিবর্তন হলে ক্যাম্পাসে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করার আল্টিমেটাম দিয়েছে।

 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন—বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক শামসুর রহমান, রহমত আলী, আরমান হোসেন, সাকিব মিয়া, আহসান হাবিব রকি, মেহেদী হাসানসহ অন্যান্য ছাত্র নেতৃবৃন্দ।

 

সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন বলেন, “২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু হয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা দাবি করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রাখার ঘোষণা দেন। অথচ রোকেয়া নামে রংপুরে আরেকটি সরকারি কলেজ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা বিভ্রান্তির সম্মুখীন হচ্ছেন।”

 

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী সরকারের শাসনামলে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পুনর্বহালের দাবি উঠেছিল, তখন তা নানান ট্যাগ দিয়ে দমন করার চেষ্টা করা হয়। ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে যখন রংপুরে একটি ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত হয়, তখনও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানায় এবং সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে সরকার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।”

 

সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে নাম পুনর্বহালের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, উপাচার্য ও শিক্ষা উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং সাধারণ রংপুরবাসীও এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

 

৫ ফেব্রুয়ারি, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ হাসিনার উদ্বোধনী ফলকটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে নতুন নাম ঘোষণা করেছেন। তবে, এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা সরকার এ বিষয়ে কার্যকর কোনও উদ্যোগ নেয়নি, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

 

তারা ঘোষণা করেন, “আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পুনর্বহাল না হলে ক্যাম্পাসে পুরোপুরি শাটডাউন কর্মসূচি পালন করা হবে। এর পুরো দায় দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উপর বর্তাবে।”

 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম শওকত আলী বলেন, “শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং রংপুরবাসীর দাবি প্রতিষ্ঠাকালীন রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পুনর্বহাল করা হোক। আমি এ বিষয়টি শিক্ষা উপদেষ্টা এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলকে জানিয়ে দিয়েছি। আশা করি, সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।”