বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আয়োজিত ‘জুলাই-পরবর্তী করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মন্তব্য করেছেন যে, ‘বাংলার সব মানুষ ক্ষমা করলেও আল্লাহ আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করবেন না’।
তিনি বলেন, “বিগত ১৬ বছরের নির্মম নির্যাতন, নিষ্পেষণের শিকার হয়েছে দেশের মানুষ। বিশেষভাবে ইসলাম ধর্ম ও মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর সবচেয়ে বেশি জুলুম হয়েছে। হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষ গুমের শিকার হয়েছে, এবং আমরা সেই গুমের রাজ্যে আর ফিরে যেতে চাই না।”
মাওলানা মামুনুল হক আরও বলেন, “আজ কিছুটা হলেও সমাজে বৈষম্য দূরীভূত হয়েছে, এবং এর পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল জুলাই বিপ্লব। ১৬ বছরের অন্যায় ও অবিচারের অবসান ঘটেছে এই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে। ছাত্ররা যদি সম্মিলিত প্রচেষ্টা করে, তাহলে তারা গত ৫ আগস্টের মতো আরও বড় কিছু অর্জন করতে পারে। ছাত্ররা শেখ হাসিনার বিভাজনের রাজনীতিকে ব্যর্থ করেছে এবং একত্রিত থেকেছে।”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্ররা যদি বাংলাদেশের মানুষকে সুসংগঠিত করতে পারে, তাহলে দেশ নতুন আলোর মুখ দেখবে।”
মাওলানা মামুনুল হক গুমের শিকার হওয়া মানুষের যন্ত্রণার কথা তুলে ধরে বলেন, “গুম হওয়া ব্যক্তির পরিবারে কি ভয়াবহ প্রভাব পড়ে তা কেবল সেই পরিবারই জানে। একজন মা, যার ছেলে ফিরে আসবে না জানেন, প্রতিটি রাত এক কঠিন নির্ঘুম যন্ত্রণায় কাটান। আমরা সেই গুমের রাজ্যে আর কোনোদিন ফিরে যেতে চাই না।”
তিনি উল্লেখ করেন, “ভবিষ্যতে বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ, যার সংবিধান হবে আল-কোরআন। ছাত্ররা রাজপথে রক্ত দিয়েছে, আবার নামাজের সময় হলে তারা নামাজে দাঁড়িয়ে গেছে। এটি ছিল জুলাই বিপ্লবের চেতনা ও স্পিরিট। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে, যাতে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের অধিকার নিশ্চিত করা যায়।”
এছাড়া, সভায় খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আলী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল হক, ইসলামী বক্তা আব্দুল হাই মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ, খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি কামাল উদ্দীনসহ অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।