ঢাকা , রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেখ মুজিবের মতো অবস্থা হয়েছে বাশারের বাবার

সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রতিচ্ছবি

সিরিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেন বাংলাদেশের ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের একটি প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের শহরতলীতে বাশার আল-আসাদের বাবা, হাফিজ আল-আসাদের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার ঘটনাটি এখন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আলোচিত। বিক্ষোভকারীরা ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে এই ভাস্কর্যটির মাথা খুলে ফেলেছে, যা তাদের প্রতিবাদের এক শক্তিশালী প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে বিক্ষুব্ধ জনতা ভাস্কর্যটি ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে।

 

এই ঘটনার মাধ্যমে সিরিয়ায় একটি নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। সিরিয়ার পরিস্থিতি ইতোমধ্যেই বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যেখানে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদবিরোধী গোষ্ঠীগুলো দামেস্কে প্রবেশ করেছে এবং আসাদ নিজেও দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বিদ্রোহী গোষ্ঠী, বিশেষত হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস), একের পর এক শহর দখল করে ফেলেছে, এবং সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় দারা ও সোয়েদা শহরগুলোও বিদ্রোহীদের দখলে চলে গেছে। সরকারি বাহিনী এসব শহর থেকে পিছু হটেছে, যা সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে।

 

এই ঘটনার সাথে বাংলাদেশের ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের তুলনা করা যেতে পারে। গত বছরের জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে ধরনের উত্তাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, সেখানে ছাত্র-জনতার আন্দোলন এবং বিক্ষোভের পাশাপাশি সরকার বিরোধী বিভিন্ন প্রতীক এবং ভাস্কর্যেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। বিশেষত, শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্ক এবং প্রতিবাদ সামনে আসার পর, তা এক ধরনের রাজনৈতিক প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। তেমনি, সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের বাবার ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনাও রাজনৈতিক প্রতিবাদের এক রূপান্তরিত চিত্র।

 

সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এখনো দেশে ফিরতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিজয়ী হওয়ার পর, সিরিয়ার রাজনৈতিক সংকট আরও গভীর হয়েছে এবং দেশটির ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঢাকা পড়েছে। তবে, এই পরিস্থিতি সিরিয়ার ইতিহাসের একটি মোড় পরিবর্তনকারী মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে, যেখানে একদিকে রাজনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম, অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদী অস্থিরতার শঙ্কা।

 

এছাড়া, সিরিয়ার এই বিপর্যয় আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং সংস্থা এই সংকটের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে, তবে সিরিয়ার পরিস্থিতির সমাধান এখনও অনিশ্চিত। সিরিয়ার যুদ্ধ এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিজয়ের পর, দেশটির ভবিষ্যত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

সুত্রঃফ্রান্স ২৪

Tag :

শেখ মুজিবের মতো অবস্থা হয়েছে বাশারের বাবার

আপডেট সময়: ০৫:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রতিচ্ছবি

সিরিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেন বাংলাদেশের ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের একটি প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের শহরতলীতে বাশার আল-আসাদের বাবা, হাফিজ আল-আসাদের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার ঘটনাটি এখন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আলোচিত। বিক্ষোভকারীরা ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে এই ভাস্কর্যটির মাথা খুলে ফেলেছে, যা তাদের প্রতিবাদের এক শক্তিশালী প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে বিক্ষুব্ধ জনতা ভাস্কর্যটি ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে।

 

এই ঘটনার মাধ্যমে সিরিয়ায় একটি নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। সিরিয়ার পরিস্থিতি ইতোমধ্যেই বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যেখানে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদবিরোধী গোষ্ঠীগুলো দামেস্কে প্রবেশ করেছে এবং আসাদ নিজেও দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বিদ্রোহী গোষ্ঠী, বিশেষত হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস), একের পর এক শহর দখল করে ফেলেছে, এবং সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় দারা ও সোয়েদা শহরগুলোও বিদ্রোহীদের দখলে চলে গেছে। সরকারি বাহিনী এসব শহর থেকে পিছু হটেছে, যা সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে।

 

এই ঘটনার সাথে বাংলাদেশের ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের তুলনা করা যেতে পারে। গত বছরের জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে ধরনের উত্তাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, সেখানে ছাত্র-জনতার আন্দোলন এবং বিক্ষোভের পাশাপাশি সরকার বিরোধী বিভিন্ন প্রতীক এবং ভাস্কর্যেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। বিশেষত, শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্ক এবং প্রতিবাদ সামনে আসার পর, তা এক ধরনের রাজনৈতিক প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। তেমনি, সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের বাবার ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনাও রাজনৈতিক প্রতিবাদের এক রূপান্তরিত চিত্র।

 

সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এখনো দেশে ফিরতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিজয়ী হওয়ার পর, সিরিয়ার রাজনৈতিক সংকট আরও গভীর হয়েছে এবং দেশটির ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঢাকা পড়েছে। তবে, এই পরিস্থিতি সিরিয়ার ইতিহাসের একটি মোড় পরিবর্তনকারী মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে, যেখানে একদিকে রাজনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম, অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদী অস্থিরতার শঙ্কা।

 

এছাড়া, সিরিয়ার এই বিপর্যয় আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং সংস্থা এই সংকটের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে, তবে সিরিয়ার পরিস্থিতির সমাধান এখনও অনিশ্চিত। সিরিয়ার যুদ্ধ এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিজয়ের পর, দেশটির ভবিষ্যত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

সুত্রঃফ্রান্স ২৪